সম্পাদকীয়--

আচ্ছা, এমনটা তো হতেই পারে--যুদ্ধে কোন সৈন্য লাগলো না--না স্থলসেনা, না জলসেনা বা বায়ু সেনা কিংবা হাতিয়ার, গোলা বারুদ ট্যাংক, না কোন রকম যুদ্ধ যান, অথচ শত্রুদেশকে অনায়াসে দুর্বল নিঃস্ব করে দেওয়া গেল ! হয়ত আমাদের দেশের ক্ষেত্রে এমনটাই ঘটছে !

রাতে শুয়ে যখন গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকি মনের মধ্যে হাজারও ভাবনাচিন্তা এসে ভিড় করে। মনে পড়ে আমাদের দেশের মহামারীর কথা। তিন লক্ষ লোক যাতে বেঘোরে প্রাণ দিলো। ভাবতে গেলে রাতের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে বই কি !

হ্যাঁ যা বল ছিলাম, শত্রুতা আপনাদের দেশের সঙ্গে আছে, হয়ত তা বহুদিনের, কিন্তু কিছুতেই আপনারা তার বদলা নিতে পারছেন না। আপনাদের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্রাদি আছে বটে কিন্তু তা শত্রুপক্ষের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। এ ক্ষেত্রে কি করা যাবে--কি ভাবে শত্রুকে টক্কর দেওয়া যাবে ?

ইদানিং জাতীয় স্তরে হয়ত কোন দেশ এমনি একটা ভাব ভাবনার উপর জোর দেওয়া শুরু করেছে। যেন তেন প্রকারেণ তাদের শত্রুর নিপাত চাই ! এ ব্যাপারটার মধ্যে চরম গোপনীয়তার ব্যবস্থা থাকতেই হবে, এমন কোন গুপ্ত গবেষণাগার তৈরি হয়ে থাকবে যেখানে মানুষের মারণ যজ্ঞের আয়োজন চলছে, যেখানে তৈরি হচ্ছে আমর ভাইরাস, এ সব অগণন ভাইরাসগুলি শত্রুর দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই ভয়ানক জীবননাশক সূত্রগুলি হল ছড়িয়ে যাওয়া ভাইরাস, যা কিনা করবে শত্রু দেশকে বিপর্যস্ত ও বিধ্বস্ত। আমাদের শত্রুদেশ এমনি তর চক্রান্তকারী বিনাশক বিশ্বাসঘাতি কোন শত্রুদেশ হবে, তাদের গবেষণাগারেই বুঝি লোকচক্ষুর অন্তরালে গোপন গুপ্ত মন্ত্রণাতেই তৈরি হয়েছে এই মারণ অস্ত্র, করোনা ভাইরাস।

হ্যাঁ এমনটা তো হতেই পারে, ভারতকে দুর্বল করতে, হতে পারে এটা একটা গণশত্রু দেশের গভীর ষড়যন্ত্র। এই ধরনের চক্রান্ত, ঠান্ডা মাথার চিন্তা শক্তির গুপ্ত প্রয়োগের এক গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। এই ভাবে পরিকল্পনা করে অব্যর্থ মারক ভাইরাস তৈরীর গবেষণাগারের কাজ শুরু হতেই পারে, সেই সঙ্গে এই সব ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার ওষুধ প্রতিষেধক আগেভাগেই তৈরি করে রাখা হচ্ছে। যাতে নিজের দেশের কোন বিশেষ ক্ষতি না হয়ে যায়। এর কারণ হল, নিজের দেশকে বাঁচাবার ব্যবস্থা রেখে শত্রু দেশের ওপর নীরব বিশ্বাসঘাতক হামলা করা। এমনি এক চক্রান্তের কবলে পড়তেই পারে আমাদের দেশ, ভারত। এ এক নতুন ধরনের যুদ্ধপ্রক্রিয়া। শত্রুদেশকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে, নিস্তেজ করে, নিজের আধিপত্য বিস্তারের এই বুঝি অত্যাধুনিক রণকৌশল !

বর্তমান সময়ে এক চরম অব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে চলছে আমাদের দেশ, সব রকম সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে চলছি আমরা।

এত সবের মধ্যেও কিন্তু গুরুগম্ভীর প্রসঙ্গ সব সময় আমাদের ভালো লাগে না। ভীত ও বিষন্ন মনের প্রতিক্রিয়ায় আমরা ক্রমশ ক্ষরিত হয়ে পড়ছি। সব কিছু অগ্নিদাব অবস্থা থেকে নিজাত পেতে তবু আমরা চেষ্টা করি দুঃখ বেদনা যন্ত্রণা ভুলে থাকতে। এত কিছুর মাঝেও এক সময় প্রসঙ্গান্তর ঘটে যায়। মনকে শান্ত করতে চেষ্টা করি, কিছুটা অমনোযোগী হবার চেষ্টা করি। মনের উত্তাল কথা ভাবনা অভিব্যক্তিকে স্তিমিত করতে চাই।

এবার প্রসঙ্গান্তরে আসছি, আমাদের জানাতে ভাল লাগছে যে এত কিছুর মধ্যেও আমাদের স্বরধ্বনি নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। প্রতিটি সংখ্যায় অনেক নামী অনামী লেখকের সমাবেশ ঘটছে। আসুন আমাদের এই কঠিন সময়কে একটু অবসর দিই। দুঃখস্তাপের এই যাপনকে সরিয়ে রেখে খানিক মনের স্বস্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করি--আমরা মনের কথা লিখি, মনের কথা বলি। বস্তুত সাহিত্যে মানুষের জীবনধারা কালের দেওয়ালে ক্ৰমশঃ ছেপে যায়। আমাদের সুখ দুঃখ বেদনাই তো সাহিত্য বহন করে নিয়ে যায় আগামীর প্ৰকাশে-আলোকে।

পরিশেষে কিছু বিষয় লেখক, কবি ও পাঠকদের জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখছি--

ব্লগে প্রকাশিত লেখাগুলিতে লেখকের নাম বর্ণানুক্রমিক সাজানো হয়েছে।

আমাদের দ্বিমাসিক ব্লগ ও ই-পত্রিকা, স্বরধ্বনি ও বর্ণালোক নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়ে চলেছে। সম্পাদকীয় কলম শেষ করার আগে লেখক লেখিকা ও পাঠকদের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনারা এই ব্লগ ও ই-পত্রিকাটি পড়ুন। আপনাদের ভালো মন্দ লাগার অনুভূতি শেয়ার করুন। পত্রিকার ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলির কথা আমাদের জানান এবং তার প্রতিকারার্থে আপনাদের মূল্যবান পরামর্শ দিন। আজ এ পর্যন্ত, ধন্যবাদান্তে--তাপসকিরণ রায়, সম্পাদক, স্বরধ্বনি।

সহ-সম্পাদিকার কলমে---

একে এই অতিমারির সময়, তায় আবার ঝড়! ঝড় তো ঝড়, দুনিয়া উথাল পাথাল করে ছেড়ে দিয়েছে একেবারে!

কালবৈশাখী নিয়ে কবি মোহিতলাল মজুমদার বলেছেন-

"এত যে ভীষন তবু তারে হেরি

ধরার ধরে না হর্ষ।

ওরি মাঝে আছে কালপুরুষের

সুগভীর পরামর্শ।" আরে বাবা, সেসব দিনে কালবৈশাখী ছাড়া ঝড় বলতে তেমন আর কিই বা ঝড় হতো!

আমাদের ছোটোবেলায় কালবৈশাখী দেখেছি, এখন আর সেরকম দেখি না। তবে ঝড় তো হয়েই যাচ্ছে একের পর এক, তায় আবার নামের কত না বাহার আয়লা, বুলবুল,আমফান,আর সম্প্রতি এই যে ঝড় বয়ে গেল যশ, কেউ কেউ বলছে ইয়াস! নামে কী যায় আসে যে নামেই ডাকো না কেন ঝড় তো ঝড়ই হবে। ভয়ঙ্কর এক তুফান ! সবকিছু যেন তছনছ করে দিয়ে চলে গেছে।

প্রবল বিধ্বংসী ঝড়ের তাণ্ডবনৃত্য যারা প্রত্যক্ষ করেছেন তারাই জানেন কী গেল আর কী রইলো।

যাই হোক সময়ের ঘড়ি থেমে থাকে না কখনোই। ধ্বংস স্তূপের মাঝেই লুকিয়ে থাকে নূতন সম্ভাবনার বীজ।

প্রত্যেকবারই ঝড় বৃষ্টি তুচ্ছ করে মানুষ লেগে পড়ে নূতন উদ্যোগে নূতন উদ্যমে, আবার সব কিছু সাজিয়ে তোলে মনের মতো করে। জানে আবারো আসবে ঝড়,ঝঞ্ঝা, তুফান, তছনছ করে দিয়ে যাবে একেবারে, তবুও হার মানতে চায় না সৃজনশীল মানুষ! ঝড়-ঝঞ্ঝা ,তুফান, শীতের হিমেল হাওয়ায়, গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে ,বর্ষার সন্ধ্যায় ,বসন্তের বিকেলে বিরহ-বেদনায় , আনন্দে দুঃখে সাজিয়ে তোলে আপন সৃষ্টির সম্ভার। অপার সম্ভাবনাময় সেরকমই কিছু কিছু লেখা দিয়ে সাজানো আজকের ডালাখানি।--সাবিত্রী দাস, সহ-সম্পাদিকা, স্বরধ্বনি।


Monday 7 June 2021

সীমা ব্যানার্জ্জী-রায়

 



ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টিকে

সীমা ব্যানার্জ্জী-রায় 


আজ আমার খোলামকুচি মন 

শুধুই আত্মসমর্পণ-

আলতো পরশ মেখে বৃষ্টিপাতে

শুকনো কালির পদ্য লিখি হাতে- 

অতল খুঁজি বিলীন চোখে যেই আলো

আদল ধুয়ে রঙ্গীন ছবির ঘোর কালো।

শুন্য ঝুলির দাবি শুধুই রাগ করে

হৃদয় ভাবে রোষটা করে কার পরে।

আপন মুঠো করলে ফুটো 

তখন কি আর মুক্তি মেলে?

ঘরের মধ্যে পর যে থাকে

নাড়ছে সে যে খড়কুটো।

তাই আমার পাপড়িভেজা মন

করে আত্মসমর্পণ......


Sunday 6 June 2021

সন্ধ্যা রায়ের দুটি কবিতা

  

সন্ধ্যা রায়ের দুটি কবিতা-- 

রঙ


কেমন করে বুঝব বল দুনিয়ায় কে রঙ বদলায় ?

রঙ মাখলে এই দুনিয়ার মানুষ চেনা দায়। 

নীল আকাশে রামধনু রঙ ছড়িয়ে আছে। 

দূর নিলিমায় সবই রঙ দেখো মিশে আছে। 

প্রভাত পাখি মিষ্টি রঙে সুরে সুরে গান গেয়ে যায়। 

ওরা কিচিরমিচির গান ধরে ঐ রঙের ছোঁয়ায়। 

সকাল হলেই সূর্য কেমন রঙ মেখে নেয়। 

সন্ধে হতেই সে রঙ ভরে তারায় তারায়। 

চাঁদনি রাতে মেঘের সাথে ও রঙ হবে সাদা কালো। 

দিনের বেলা অগ্নি শিখায় দাবানলে আগুন জ্বালো। 

তুমি হরেক রঙ মেখে নেও তোমার মনের মত। 

এই রঙের দেশে রঙিন হোয়ো তোমার ইচ্ছে যত।


কবিতা 


কবিতা, আমি তোমায় ভালোবাসি। 

তুমি কাঁদাও আমায়-- 

কখন বুকে যন্ত্রণা হয় তোমায় ভেবে। 

তুমি কবির কাছে হাস্যময়ী, লাস্যময়ী 

স্নেহময়ী, রহস্যময়ী,

ঝংকারিণী, প্রস্ফুটিতা, 

পারনা আমার কাছে থাকতে। 

কবিতা, আমি তোমায় ভালোবাসি, 

তুমি ছেড়ে যেও না আমায়, 

তুমি আমার স্বপ্নে আস, গন্ধে আস, বর্ণে আস, 

তুমি আমার প্রেমে আস, মনে আস,

আমার আকাশ বাতাস তোমায় নিয়ে। 

তবে কেন কষ্ট দাও আমায় 

তুমি ছেড়ে যেওনা আমায় ?


Wednesday 26 May 2021

বহ্নিশিখার তিনটি কবিতা

 



বহ্নিশিখার তিনটি কবিতা-- 


‘ইচ্ছে করে'


ইচ্ছে করে নিশুতি রাতের নীরবতার হাত ধরে চলে আসি, 

দখিনা বাতাস হয়ে খোলা জানালার নাড়িয়ে ডালা --

চলে আসি। 

ঘাসেদের গায়ে রাতের কুয়াশার মতন, 

জড়িয়ে আদর মেখে দিই,

ভোরের ডানায় রোদের টাওয়েলে  মুছে দিই কপোল। 

রচি দূর্বাদলে সোহাগবাসর । 

এই সব দিনরাত্রি, প্রাত্যহিকী, মেকি ভালোবাসা-সংসার, 

সব কিছু ছেড়ে, খুব ইচ্ছে হয় চলে আসি, 

সত্যিই ! যদি চলে আসি?

যদি সত্যিই কোন একদিন চলে আসি  

তখন  বাসবে তো ভালো?

ফুলে ফুলে কৃষ্ণ চূড়া পড়বে কি হেলে?


-------


“গোঙানো সময়"


ইচ্ছেকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে  খোঁজ নেয়া হয়নি কিছুকাল,

ব্যস্ততার গতিপথে জ্বলতে থাকা তোমার সবুজ বাতিই স্বস্তি, 

এঁকেবেঁকে নিষ্ঠাহীন চলতে গেলেই স্নায়ুর পথে জ্যাম বেঁধে যায়,

চোখের ভিতর জ্বলে ওঠে লাল বাতির সংকেত। 

অথচ চেয়েছিলে কেউ একজন সঙ্গী হোক, 

লক করা দরজার চাবিটির মত। 

খোঁজ নিক গোঙানো মন এবং অস্থির সময়ের। 

ইচ্ছের  ভুলে যে ক্ষত হয়ে গেলো তা সারাতে পথ খুঁজতে খুঁজতে

পাঁজর থেকে ঝরে পড়ে আস্তরণ,

এখন শুধু  চেয়ে থাকা  অপরাধবোধ আর  বিষণ্ণতায়। 

----------


“শুদ্ধতা "


লকডাউনে পাখিদের অভয়ারণ্য পৃথিবীর  সবুজ আঙিনা। 

দোয়েল, শ্যামা,ময়না- টীয়ার নরম ডানায় 

শুদ্ধতার উচ্ছ্বাস। 

যদিও কোকিলের টুঁয়ো সুরে নিদাঘ বসন্তবেলা  বিষন্নতায় একা,

বড্ড বেমানান আজ তার কোমল গান্ধার নানা প্রাহরিক সুর। 

নির্বাণ ধনুকের ছিলার মত  যাবতীয় সংসার যাপন,

তবুও স্বচ্ছতায় বিম্বিত নীলাকাশ  নদীর বুকে স্বপ্ন আকেঁ জীবনের, 

আশা জাগায়, অনাগত প্রজন্মের পৃথিবী হবে নির্মল এক শুদ্ধতার। 

------------


Tuesday 25 May 2021

অর্পিতা ঘোষ পালিতের গুচ্ছ কবিতা

 



অর্পিতা ঘোষ পালিতের গুচ্ছ কবিতা-- 


শুনি ভোরের আওয়াজ


বলেছিলে নিয়ম ভাঙার খেলা ভেঙে একদিন হলুদ আলো নিয়ে আসবে,

অপেক্ষার প্রহর গুনে কতযুগ ধরে ধূসর মাঠে বসে…


আজ বিবর্ণ স্মৃতির চুপকথারা শ্বাসরোধ করেছে,

আড়মোড়া ভেঙে উঠে দাঁড়ায়, দেখি সূর্য নিভু নিভু

সব ভুলে আলোর জন্য দুচোখে আগুন জ্বালি –

মেহনতের বিনিময়ে যদি কিছু পাই,

নেই ক্ষনিকের বিশ্রাম, বীজ পুতি চারিধারে...

পরিত্যক্ত উঠোন সৃষ্টির শুরুর অপেক্ষায়

অতৃপ্ত প্রেমিকের মতো চাতক মন নিয়ে থাকি।

ধীরে ধীরে উঠোনে নেমে আসে সূর্য...

সবুজে ভরে ওঠে চারপাশ, মাথা উঁচিয়ে দাঁড়ায়।


এখন ভোরে কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙে রোজ

    ---------------------------------    


২)

কবিতা-  ব্যর্থ-মন কথা


            ।। ১ ।।


বিশ্বাসের ইমারতে একদিন ফাটল ধরে

সময়ের সরণী সব ভুলিয়ে দেয়,

গঙ্গার ঘাটের সিঁড়িতে একা বসি–

চোখের বৃষ্টি এসে জলে মিশতে চাই...


             ।। ২ ।।


হোঁচট খেয়ে জুতো ছিঁড়ে গেলে মুচি নিখুঁতভাবে সেলাই করে,

সে জানে কিভাবে ছেড়া জুতো জুড়তে হয়।

অথচ অস্থির ভাঙা মনের খোঁজ রাখেনা...

সম্পর্ক ভাঙনের বোঝাপড়া নিজেকেই করতে হয়


               ।। ৩ ।।


মনবোধের খবর সারাদিন কেউ নেয়না,

রাতে ঘুমের অতলে পথের দিশা খোঁজে...

ডুব সাঁতার দিয়ে অতীত আদর করে

ব্যর্থতা ছুঁয়ে থাকে চুক্তিপত্রে


             ।। ৪ ।।


যেদিকে তাকায় পর্ণমোচী আর ফণিমনসা,

শূন্যতার সাথে শুধু যোগাযোগ,

আঁধার রাতের শ্বাস প্রপাতে ধসে

শুনি  ঘাসের কান্নার আওয়াজ...


       ----------------;;;;---------------


পৃথা রায় চৌধুরীর দুটি কবিতা

 

 

পৃথা রায় চৌধুরীর দুটি কবিতা-- ​​


ডানা


বহুকাল হলুদপাপড়ি পাখি আসে না বলে

নদীশাবক এগিয়ে আসে,

পায়ে পায়ে চরাচর মাখামাখি;


ভুলি নেমে আসা মৌসুমী মার্গে

একছত্র দুছত্র রূপোলি হরিণ

কথা বলে মরীয়া রঙ্গনমাঠ।


কি শোনো, বা না শোনো,

একইভাবে সর্বত্র থাকি,

মূর্তির কোলে স্নানের আসর জেগে থাকে।


হে মহামানুষ...

আলগা বাসরে পৃথিবীর বিষাক্ত নুন ঝরে যায়

অতি পছন্দের কাঞ্চন ফুল ঢেকে দেয়

নগ্নতার লাগাতার অভ্যাস।

 

বুনো প্যালেট 


আশ্চর্যনীল মায়াসুঁড়িপথে

এগিয়ে দিয়েছি অহংকারের রোদ,

তামাম বৃষ্টিজন্ম।



স্বরের নলি বেয়ে যেটুকু নখ,

তার ঝিরঝিরে ফোঁটায় চাঁদগন্ধী কাঁকন।


আবেশে বন্ধ চোখে রেড ম্যাপেল

নয়নতারা চিনি না;

এগিয়ে আসে জ্যোৎস্নাশিশু,

দেবক্ষেত্রের পর্বতমালায়।


মৃগনাভি থেকে কটিবন্ধ,

মণিবন্ধের নামে মুগ্ধ শিশিরস্নান

টুপেলো পাতার দুপুর


একটিপ দুইটিপ ছুঁয়ে যায় মেয়েলি ইজেল 


প্রেরণা বড়াল

 



নিশীথে

প্রেরণা বড়াল 


নিশিথে জাগায়ে রাখি মোরে।

আসিবে প্রিয়তম নেহারিব তারে।

কয়ে গেছে",যদি থাকি দুরে-

তবুও আসিব আমি তব অন্তঃপুরে। 

চোখে চোখ রাখি হাতে হাত ধরি,

কহিব মনের কথা দোহে প্রাণভরি"।

তাহারই আশ্বাসে ওগো নিশারানী,

পল পল নিরখি তোমা হয়ে প্রহরিণী। 

সে যদি বটবৃক্ষ লতা তবে আমি,

তাহারে জড়ায়ে সুখ পাই দিবাযামী।

সে মোর প্রানসখা মনে সদা রয়,

পাশে  যদি থাকে মোর সব করি জয়। 

রাতের সাথে রয় চাঁদ আর তারা,

রাত জাগা পাখি রবে আর রব মোরা।

নিশাচর ডাকে যদি মনে ভয় হয়,

তাহারই বক্ষ মাঝে লইব আশ্রয় ।


লুতফুল বারি পান্না

 



অপেক্ষা

লুতফুল বারি পান্না

.

একলা বসে আছি অপেক্ষায়

অনেকগুলো অপেক্ষার পাশে

দিনগুলো সব ঘুরছে বারান্দায়

রোদ ঘামছে শুকিয়ে ওঠা ঘাসে

.

একলা তবু আছি অপেক্ষায়

বদলাবে দিন, দিন কেন বদলায়?

প্রশ্ন আগুন ছুঁড়ছি নিজেকেই

কথার ভিড়ে ছিটকে যাচ্ছে খেই

.

একলা তাও, একলা অপেক্ষায় 

কাঁধের উপর অপেক্ষাদের চাপ

ছাতি ফাটছে দুপুরে তেষ্টায় 

ঘাম ঝরাচ্ছে জৈষ্ঠ্য মাসের তাপ

.

ছটফটে সব অপেক্ষা দুই হাতে

বদলে যাবে পুড়িয়ে দেয়া দিন

শীতল বাতাস, ভিজিয়ে দেয়া মেঘ

গলে আসছে জমিয়ে রাখা ঋণ

.

দিনবদলের অপেক্ষারা আজ

নেমে আসুক, ভেঙে নামুক ভাঁজ


সীমা ব্যানার্জ্জী-রায়

  ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টিকে সীমা ব্যানার্জ্জী-রায়  আজ আমার খোলামকুচি মন  শুধুই আত্মসমর্পণ- আলতো পরশ মেখে বৃষ্টিপাতে শুকনো কালির পদ্য লিখি হাতে-  অত...